কবিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কি লিখি কি লিখি করে
কেটে গেল সমস্ত সন্ধ্যেটা ,
এখন রাত গভীর ;
নৈঃশব্দ্য চিরে শেষ মেট্রো টাও চলে গেল
অথচ মনোমত কয়েকটা শব্দের অভাবে
লেখা হলো না একটা কবিতা...
মাঝে মাঝে এমনই হয়
শব্দেরা হয়ে ওঠে নিষ্ঠুর !
দূর থেকে ভেংচি কাটে আর যেন
"কুমির তোর জলকে নেমেছিইইই"...
ছুঁতে গেলেই ঝাপসা বর্ণপরিচয় !
রাত এখন মধ্যযামে ;
আমি এখনও ব্যালকনিতে...
সামনের দুটো বাড়ির ফাঁক দিয়ে
দেখছি রাতের আকাশ,
দৃষ্টি নামিয়ে প্রসারিত করতেই
ধাক্কা খেলো চোখ সামনের বাড়ির দেয়ালে
সেখানে এখন শূন্যতা,
গরমকালে দু'চারটে শিকারী টিকটিকির
দেখা পাওয়া গেলেও এখন সব শীতঘুমে ...
হঠাৎ হাওয়ার ঝাপটায় মুখ ছুঁয়ে গেল
আমার শুকোতে দেওয়া শাড়ির আঁচল ;
অদ্ভুতভাবে মা মা গন্ধ পেলাম !
মনে পড়লো কাল রান্নার সময়
অসাবধানে হাত মুছে ছিলাম আঁচলে ...
আচমকাই বুক নিংড়ে উঠলো কান্না !
সেই হলুদের ছোপ লাগা আঁচল,
সেই ঠান্ডা নরম হাত,
সেই নুয়ে পড়া অশক্ত শরীর ...
আমি পেয়ে গেলাম একটা গোটা কবিতা
একটা যন্ত্রণা, বঞ্চনা,
আর ক্ষোভের জ্বলন্ত কবিতা...
আমি হাতে তুলে নিলাম ডাইরি ;
চৌকিদার এর আওয়াজে সম্বিৎ ফিরলেও আমি লিখতেই থাকলাম ,
এবং লিখতেই থাকলাম
বহু অপেক্ষার সেই দীর্ঘ কবিতা...

পাঠকের মতামতঃ